Biography

সুদীর্ঘ পাঁচ দশক ধ্রুপদী সঙ্গীতচর্চায় অতিক্রম করা দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা জীবন্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী শাহীন সামাদ’র সংগীতে হাতেখড়ি সাত বছর বয়সে। বাবা-মা’র অনুপ্রেরণায় অভিষিক্ত শাহীন সেই ১৯৬৪ সাল থেকে আজ অবধি নজরুল’র গানকে বাংলাদেশের সংগীত পিপাসুদের কাছে সুষ্ঠভাবে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন। খুব অল্প বয়সেই উস্তাদ রাম গোপাল, উস্তাদ ফজলুল হক, উস্তাদ ফুল মোহাম্মদ, উস্তাদ মোহাম্মদ সগীর উদ্দিন খান, উস্তাদ মশকুর আলী খান – উনাদের মতো বিশ্ববিখ্যাত পন্ডিতদের কাছ শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নেয়ার সৌভ্যাগ্য হয়েছে শাহীন’র। পরবর্তীতে যাদের কাছে তালিম নিয়েছেন তারা হলেন – শেখ লুত্ফুর রহমান, সোহরাব হোসেন, সুধীন দাস, অঞ্জলি রায়, সানজিদা খাতুন, ওয়াহিদুল হক, আজাদ রহমান প্রমুখ।

শিল্পী জীবনের শুরু থেকেই নিজস্ব গায়কী ঢং সৃষ্টিতে সক্ষম শাহীন শুধু নজরুল সংগীত নয়, পুরোনো দিনের বাংলা গান ও আধুনিক বাংলা গান পরিবেশনে সফলতা অর্জন করেন। কলেজ -বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময় থেকেই তিনি সংগীতে সফলতা দেখিয়েছেন। কলেজে পরপর দুই বছর সাংস্কৃতিক সপ্তাহে নজরুল ও রবীন্দ্র সংগীতে প্রথম স্থান অধিকারী শাহীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা ছিলেন।

বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম শিল্পী সংস্থা :

একাত্তরে আমাদের মুক্তি সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা যখন রণাঙ্গনে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন, তখন শাহীন রণাঙ্গনে ঘুরে ঘুরে গান গেয়েছেন, উজ্জীবিত করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে। গান করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতারে। গঠন করেছেন বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম শিল্পী সংস্থা। প্রতি বছর মার্চ ও ডিসেম্বর মাস আসলেই বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী শাহীন সামাদকে স্মরণ করিয়ে দেয় ৭১’র সেই উত্তাল দিনগুলো। মন চায় পেছনের সেই দিনগুলোতে ফিরে যেতে।

ছায়ানট :

ছায়ানটে আট বছর প্রশিক্ষণ শেষে নজরুল সংগীতে প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অধিকারের গৌরব অর্জন করেন তিনি। অদ্যাবধি সুদীর্ঘ আট বছর ছায়ানটের সাথে জড়িত। বর্তমানে তিনি ছায়ানটে সিনিয়ার শিক্ষিকা (নজরুল) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মানবসেবায় শাহীন সামাদ :

১৯৯১ সালে বাংলাদেশে বয়ে যাওয়া প্রলয়ঙ্করী সাইক্লোন ও সামুদ্রিক জলোচ্ছাসে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে দেশের প্রথিতযশা শিল্পীদে র সাথে আবুধাবীতে “কনসার্ট ফর বাং লাদেশ সাইক্লোন ডিজাস্টার রিলিফ” শিরোনামে শাহীন অংশ নেয়। এই কনসার্টের অডিও ক্যাসেট বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবি প্রকাশ করে যেখানে শিল্পীর বাংলা, উর্দু, হিন্দি ও পাঞ্জাবি গান স্থান পায় যার মধ্যে দাদরা, গজল, ভোজন, গীত ও ফোক ছিল। মধ্য প্রাচ্য ভিত্তিক খ্যাতিসম্পন্ন পত্রিকাসমূহ – গালফ নিউজ, এমিরেটস নিউজ, খালিজ টাইমস সহ আরো বেশ কয়েকটি পত্রিকাতে এই বিষয়ে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। একই উদ্দেশ্যে বাহরাইন এর গ্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিল্পী অংশ নেন যা গালফ ডেইলি নিউজ -এ একটানা প্রকাশিত হয়।

দেশের বাহিরের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ / কর্মকান্ড :

১৯৮৯ সালে লন্ডনে পরিবেশিত গজল, ভোজন ও গীত এর সংমিশ্রনে শিল্পীর একক অ্যালবাম “মোহাব্বত মে ইয়ে কেয়া” যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য ও দূর প্রাচ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত পত্রিকা “এশিয়ান হেরাল্ড” একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। ভারতীয় বিদ্যা ভবন, কমনওয়েলথ ইনস্টিটিউট ও রয়েল ফেস্টিভ্যাল হলে লাইভ কনসার্টে সংগীত পরিবেশন করেছেন। স্ব-থিয়েটার কর্তৃক লন্ডনে আয়োজিত একক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিনি ইনার লন্ডন এডুকেশন অথরিটি’র অধীনে সংগীত শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন এবং লন্ডনে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এশিয়ান ও নন-এশিয়ান শিক্ষার্থীদের গান শিখিয়েছেন।

মিডিয়াতে শাহীন :

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে শিল্পীর সাক্ষাৎকার ও অনুষ্ঠানের নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশী নিউস টুডে ২০১০ সালে শিল্পীর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। ক্যালিফর্নিয়া’র বার্কলি থেকে বিখ্যাত পত্রিকা ইন্ডিয়া-ওয়েস্ট ১৯৮৯ সালে শিল্পীর অনুষ্ঠানের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। শিল্পী বিবিসি টিভি’র ইন্টারভিউতে কয়েকবার অংশ নিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের একটি বিখ্যাত পত্রিকা ১৯৮৭ সালে তার একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। তিনি এখনো নিয়মিতভাবে রাষ্ট্রীয় রেডিও ও টেলিভশন এবং বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলে গান পরিবেশন করছেন।

পুরস্কারের ঝুলি :

শিল্পী শাহীন সামাদ সংগীতে গৌরবময় ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। এছাড়া নজরুল ইনস্টিটিউট আজীবন সম্মাননা, ন্যাশনাল প্রেসক্লাব অ্যাওয়ার্ড, বাংলাদশ হাই কমিশন (কলকাতা) অ্যাওয়ার্ড সহ অজস্র পুরস্কার প্রাপ্তির রেকর্ড শিল্পীর ঝুলিতে রয়েছে।

সাংগঠনিক কর্মকান্ড :

ছায়ানট সংস্কৃতি অঙ্গন, নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদ, সেতুবন্ধ, নজরুল ইনস্টিটিউট সহ বহু সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে শিল্পী জড়িত আছেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিসংগ্রামে দেশ স্বাধীনের ব্রত নিয়ে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে এই দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করার উদ্দেশ্যে কণ্ঠ সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা এই শিল্পী তার বাকি জীবনটা দেশের জন্য, দেশের জনগণের জন্য এবং বিশেষত সংগীত পিপাসুদের জন্য উৎসর্গ করতে চান।

Her Achievements:

Bangladesh Mohila Poroshod award, 2009.
Ninth North America Nazrul conference award, 2004
Justice Abu Sayeed Chowdhury award, Dhaka 2002.
Shetubondhon award, Dhaka2001.
Amra Surjomukhi award, Dhaka 2000.
National Press club award, Dhaka 2000.
Poush Mela award, Dhaka 2000.
Bangladesh Deputy High Commission award, Calcutta 1999.
Bangladesh Human rights foundation award, 1998.
Rotary club of Shamooly award, Dhaka 1997.
Dilip Kumar Ray sotoborsho award, Calcutta 1997
Prosongo Nazrul Sangeet, Dhaka 2017

দেশের বাহিরের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ / কর্মকান্ড :

১৯৮৯ সালে লন্ডনে পরিবেশিত গজল, ভোজন ও গীত এর সংমিশ্রনে শিল্পীর একক অ্যালবাম “মোহাব্বত মে ইয়ে কেয়া” যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য ও দূর প্রাচ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত পত্রিকা “এশিয়ান হেরাল্ড” একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। ভারতীয় বিদ্যা ভবন, কমনওয়েলথ ইনস্টিটিউট ও রয়েল ফেস্টিভ্যাল হলে লাইভ কনসার্টে সংগীত পরিবেশন করেছেন। স্ব-থিয়েটার কর্তৃক লন্ডনে আয়োজিত একক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিনি ইনার লন্ডন এডুকেশন অথরিটি’র অধীনে সংগীত শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন এবং লন্ডনে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এশিয়ান ও নন-এশিয়ান শিক্ষার্থীদের গান শিখিয়েছেন।